মানুষের প্রয়োজন আনন্দ ও খুশীর উপলক্ষ। আরো প্রয়োজন বিনোদনের আয়োজন ও ক্ষেত্র! এ ছাড়া যে মানুষের জীবন চলে না! চলতে পারে না! এটি একটি সত্য, একটি বাস্তবতা!যে কোন বাস্তবতাকেই ইসলাম মূল্যায়ন করেছে! মানবতার কল্যাণ ও মানুষের আবেগ-অনুভূতি রক্ষা করেই ইসলামের বিধান এসেছে! ইসলামের প্রতিটি বিধানে মানুষের যৌক্তিক আবেগ-অনুভূতি, স্বভাব ও রুচির যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়েছে! জীবনের চাকা সচল রাখার জন্য যৌক্তিক বিনোদন ও রোমান্টিকতার আয়োজনও করেছে। পাশাপাশি এগুলোকে ইবাদত এবং সাওয়াব অর্জনের মাধ্যম হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছে। এধরনের কাজ ইসলামে অনেক, যেগুলো মানুষ তার আনন্দ ও বিনোদনের জন্য, রোমান্টিকতা হিসেবে করে, শুদ্ধ নিয়তের সাথে হলে এসবও ইসলামে ইবাদত!! স্ত্রীর সাথে দৌড়…
Author: আমির হামজা
আলোচ্যবিষয়ঃ ১। তালাক সাধারনত যখন কোনো স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, তাদের আর একসঙ্গে জীবন যাপন করা, একই ছাদের নিচে একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভবপর বলে মনে হয় না, তখনই দুঃখজনকভাবে তালাক নামক ‘দুর্ঘটনা’ ঘটে যায়। সৃষ্টি হয় একটা সামাজিক সংকট। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে তালাক ছাড়া সত্যই কোনো উপায় থাকে না। অবশ্য আমাদের সমাজে এমনটা নিতান্তই কম। তালাককে যদিও অনেকে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ আর অশান্তি-অস্থিরতার প্রতিকার মনে করে, কেউবা আবার মনে করে রাগ-ক্ষোভ-বিদ্বেষ মেটানোর ‘উপযুক্ত হাতিয়ার’; কিন্তু বাস্তবে এসবের জন্য তালাক একেবারেই সাময়িক একটা মাধ্যম মাত্র। সাধারনত আমাদের সমাজে তালাকের দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-বিবাদ নিরসন হয় না, অশান্তি-অস্থিরতাও দূর হয় না;…
আমাদের সমাজে অধিক পরিমাণে আলোচনা হয় স্বামীর প্রতি স্ত্রীর দায়িত্ব, কর্তব্য নিয়ে। যার কারণে মনে হয়, সংসারে স্ত্রীর কোন মূল্যই নেই, স্বামীর সংসারে মুখ বুজে খেটে যাবার জন্যই তার পয়দা। যখন সমাজে এই চিন্তা প্রবল হয় তখন এই সুখের সংসার, এই প্রেমের গার্হস্থ্য স্বামী- স্ত্রীর কাছে অত্যন্ত বীভৎস আকার ধারণ করে। এই বীভৎসতা থেকে সমাজকে মুক্তি দিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পথ গ্রহণ করাই একমাত্র সমাধান। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, -শুনে রেখো, তোমরা প্রত্যেকেই তত্ত্বাবধায়ক। আর প্রত্যেকেই তার অধিনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ইমাম বা নেতা যিনি শাসন করেন সাধারণ মানুষকে, তাকেও…
আমীর হামযাহ স্বামী-স্ত্রী। দুটি জীব, দুটি প্রাণ। একত্রে জীবনযাপন। এক ঘরে এক পরিবেশে পার করতে হয় জীবন। তাই মাঝে মাঝে টুকটাক কিছু হওয়াই স্বাভাবিক। আর এমন না হলে, এক ঘেয়েমিও চলে আসে। তবে যখন এর পরিমাণ বেশি হয় বা দীর্ঘ হয় তবে সতর্ক হওয়া উচিৎ। যাতে পরস্পরের মধ্যে ঘটে যাওয়া মান-অভিমান বা সামন্য বাগবিতণ্ডা অন্য দিকে না গড়ায় তার জন্য কিন্তু কিছু মজার ‘টিপস্’ও আছে। চলুন তাহলে জেনে নিই সেগুলো। এক. মধুর সৃতিগুলো স্মরণ করুন! আপনার সঙ্গীর কোন কাজ বা আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। কারণ আপনি তাকে অনেক ভালবাসেন। সে এমনটি করবে বা বলবে তা আপনি কল্পনায়ও ঠাই দিতে পারছেন না!…
শীতকাল আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দাদের জন্য বিশেষ নেয়ামত। একজন মুসলিম এতে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। সাহবা-তাবেঈগণের নিকট এ মৌসমের বিশেষ গুরুত্ব ছিল। তাঁরা একে ইবাদতের ভরা বসন্ত মনে করতেন। লুফে নিতেন আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি। এধরনের কিছু আমল ও মাসআলা তুলে ধরা হলো। ১। অধিক পরিমাণে নফল রোযা রাখা। বিশেষত সোম ও বৃহস্পতিবার এবং চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোযা। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,“শীতকালের রোযা শীতল গনিমত!” [জামে তিরমিযী : ৭৯৭] সোম ও বৃহস্পতিবার এবং চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোযার বিষয়ে তো সহীহ বুখারী ও মুসলিমে হাদীস রয়েছে। এতে…
আল আমীন সিরাজ একটি সমাজ বিনির্মাণের পূর্বভিত হল একটি পরিবার। পারিবারিক এ ভিত যখন নড়বড়ে ও পতনশীল হয়ে যায় তখন অত্যাবশ্যকীয়ভাবেই সমাজ হয়ে পরে পতনোম্মুখ ও ভঙ্গুর। পক্ষান্তরে যখন পারিবারিক এ ভিত হয় মজবুত ও সুদৃঢ় তখন অবশ্যই পরিবারের মাধ্যমে গড়ে উঠা সমাজ হয়ে যায় তেমনই মজবুত ও শক্তিশালী। তাই সত্য ধর্ম ইসলাম একটি শক্তিশালী ইসলামী সমাজ গঠনের পূর্বেই সামাজিক অবকাঠামোর পূর্বভিত তথা পরিবার গঠনে হয়েছে সচেষ্ট এবং পরিবারকে করে তুলেছে শক্তিশালী ও সুখময়। স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন মজবুত থেকে মজবুততর হওয়ার ব্যাপারে ইসলাম গুরুত্ব দিয়েছে এবং উদ্বুদ্ধ করেছে। এ কারণেই ইসলাম বৈবাহিক সম্পর্ককে ধর্মীয় ও সামাজিক এমন এক ফাউন্ডেশন হিসেবে সাব্যস্ত…
নূর মুহাম্মদ রাহমানী সন্তান জন্মের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করাকে শরিয়তে আকিকা বলে। আকিকা করা মুস্তাহাব। মহানবী (সা.) নাতি হাসান ও হোসাইন দুজনের পক্ষ থেকে আকিকা করেছেন। সাহাবায়ে কেরামও এর ওপর আমল করেছেন। সন্তানের জন্মগ্রহণ পিতা-মাতার জন্য চরম আনন্দের। এজন্যই শরিয়ত এ নিয়ামতের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আকিকার নির্দেশ করেছে। মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে বলেছে। বাচ্চার আকিকা না করা হলে বাচ্চা বিপদ-আপদে জর্জরিত থাকে। আকিকা হয় তার ফিদিয়া বা বিনিময়। এর দ্বারা বাচ্চার বিপদ-আপদ দূর হয়। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটা ছেলে আকিকার বিনিময়ে বন্ধক থাকে। অতএব তার পক্ষ থেকে সপ্তম দিন পশু জবাই করা হবে,…
||মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী|| মহানবী (সা.) ছিলেন উন্নত চরিত্রের অধিকারী। তাঁর উন্নত সুষমামণ্ডিত চরিত্র-মাধুর্যের বিবরণ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কলম : ৪)। তাঁর চরিত্র ছিল কোরআনেরই নমুনা। উন্নত সব চরিত্র ও উত্তম স্বভাবের সমন্বয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ মানব। তাঁর জীবন আমাদের আদর্শ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর রাসুলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব : ২১)। নবীজির পুরোটা জীবনই সুন্দর। সবার সঙ্গেই তিনি উত্তম আচরণ করতেন।আর স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে তো তিনি ছিলেন আদর্শ পুরুষ। তিনি তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। উত্তম আচরণ করতেন এবং উত্তম আচরণের তাগিদ দিতেন। তিনি নিজেই বলেছেন,…
||নূর মুহাম্মদ রাহমানী|| ইসলাম পূর্বকালে সকল সমাজে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত ছিল নারী। আইয়ামে জাহেলিয়াতে অর্থাৎ মূর্খ যুগে আরবেও ছিল নারী অত্যন্ত নিম্ন মানের পণ্য-সামগ্রী। কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ ছিল অত্যন্ত অপমানজনক, যার দরুন কোনো কারণ ছাড়াই অধিকাংশকে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো। যারা বেঁচে থাকত তাদেরও সহ্য করতে হতো বিভিন্ন রকমের জুলুম-নির্যাতন। স্বামীর মৃত্যুর পর পরিত্যক্ত সম্পত্তি পাওয়া তো দূরের কথা, অন্যান্য পণ্য-সামগ্রীর মতো মিরাসের সম্পত্তিরূপে উৎসর্গ ও আত্মত্যাগের উপমা নারীকেই চলে যেতে হতো অন্যের কাছে। পক্ষান্তরে ইসলাম নারীকে দিয়েছে যথাযোগ্য অধিকার এবং সম্মানজনক মর্যাদা। প্রতিহত করেছে জুলুম-অত্যাচার। মানব হিসেবে পুরুষের মতোই সম্মানের আসনে আসীন করেছে বংশের আধার ও গর্ভের ধারক নারীকে। সম্মান-মর্যাদার খাতিরে…
।। নূর মুহাম্মদ রাহমানী ।। বিয়ে মানুষের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। সমাজজীবনের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে বিয়ের কোনো বিকল্প নেই। চারিত্রিক উৎকর্ষতা সাধন ও নৈতিক উন্নয়নে বিয়ের ভূমিকা অপরিসীম। সার্বজনীন উপকারিতা থাকার কারণে বিয়ে করতে উৎসাহিত করেছেন আল্লাহ তাআলা। কারণ এতে রয়েছে বিরাট উদ্দেশ্য। রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ হেকমত। এর মাধ্যমে চোখ ও লজ্জাস্থানের হেফাজত হয়। বংশধারা রক্ষা হয়। নেকসন্তান লাভ হয়। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে আত্মীক বন্ধন সৃদৃঢ় হয়। অন্তরে প্রশান্তি আসে। জীবনশৃঙ্খলা ফিরে আসে। জীবনে স্বচ্ছলতা আসে। মহান আল্লাহর হারামকৃত বিষয়াবলি থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। পরিবারের মাঝে মহব্বত-ভালোবাসা শক্তিশালী হয় এবং অশ্লীল ও মন্দ বিষয়াবলি থেকে সমাজ ও জাতিকে রক্ষা করা সহজ…
আমীর হামযাহ মানুষ বুঝ-বুদ্ধি, আবেগ-অনুভূতিবিশিষ্ট এক প্রাণী। একাকী জীবনযাপন করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনিভাবে সর্বদা মলিনমুখ থাকাও সম্ভব নয়। এভাবে কেউ জীবন পার করতে পারে না। মানুষের সৃষ্টিতেই এ স্বভাব ও প্রকৃতি আল্লাহ দান করেছেন। তাই মানুষের প্রয়োজন আনন্দ ও খুশীর উপলক্ষ। আরো প্রয়োজন বিনোদনের আয়োজন ও ক্ষেত্র! এ ছাড়া যে মানুষের জীবন চলে না! বিশেষত একটি বয়স পার করার পর মানুষ যখন উপনীত বয়সে পদার্পণ করে তখন অনেক ক্ষেত্রে এ ছাড়া জীবন সচল রাখা দায়! এটি একটি সত্য, একটি বাস্তবতা! তাই ইসলাম মানুষের জীবন-বিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে এ বিষয়টির যথাযথ মূল্যায়ন করেছে। যাতে ধর্মটি মানুষের স্বভাব ও রুচির সাথে…
অনেকের মানসিকতা হলো, সব সম্পদ ওয়ারিসদের কাউকে না দিয়ে অন্য কোথাও দান করে দেওয়া। অনেকেই বৃদ্ধ বয়সে এসে যখন দেখেন মৃত্যু খুব কাছাকাছি তখন মনে করেন সন্তানের জন্য সম্পদ রেখে কী লাভ? ফলে পুরা সম্পদ দান করে দেন। এটি শরীয়তের ভারসাম্যপূর্ণ উত্তরাধিকার ও বণ্টননীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল নয়। দেখুন, পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী কারুনকে মূসা আ. নসীহত করে বলেছেন- وَ لَا تَنْسَ نَصِیْبَكَ مِنَ الدُّنْیَا وَ اَحْسِنْ كَمَاۤ اَحْسَنَ اللهُ اِلَیْكَ. এবং দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলো না; তুমি অনুগ্রহ কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। -সূরা কাসাস (২৮) : ৭৭ অর্থাৎ তোমার দুনিয়ায় চলার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু তুমি হাতে রাখ। বাকিটুকু দান কর। আবেগ নিয়ে পুরো সম্পদ দিয়ে দেওয়া, নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য কোনো সম্পদ…