ইসলামের কিছু মৌলিক আক্বিদা-বিশ্বাস রয়েছে। তা হলো, নিরেটভাবে আল্লাহর একাত্মবাদের সাক্ষ্য দেওয়া। যাবতীয় শরীক-অংশিদার হতে আল্লাহ তায়ালাকে পূত-পবিত্র বিশ্বাস করা। ফেরেশতা, নবী-রাসূল ও আসমানী কিতাবের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা। মৃত্যু পরবর্তী জীবন ও তাকদীর মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা। ব্যক্তি যখন উল্লিখিত বিষয়ে পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করে, আল্লাহর একাত্মবাদ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইতি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের ঘোষণা দেয়, ফরজ নামাযসমূহ যথাযথভাবে আদায় করে, রমজানের রোযা রাখে, (ফরয হলে) যাকাত আদায় করে, (সক্ষম হলে) হজ্জ পালন করে, মন্দ ও হারাম কাজ হতে বিরত থাকে তাহলে ব্যক্তি ‘মুমিন’ ও ‘মুসলিম’। তবে কেবল এ কাজগুলো করার মাধ্যমে ব্যক্তি ঈমানের পূর্ণ উপকার, স্বাদ ও প্রশান্তি পাবে না; বরং পূর্ণ মুমিন হিসেবেও বিবেচিত হবে না।
ঈমানের স্বাদ ও প্রশান্তি লাভ করতে হলে, পূর্ণ মুমিন হতে হলে জীবনের সকল ক্ষেত্রে পূর্ণ মুমিনের পথ অনুসরণ করতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নির্দেশিত পথ ও জীবনপদ্ধতি মেনে চলতে হবে। এ বিষয়গুলো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তর ভাব ও ব্যাখ্যা সমৃদ্ধ অল্প কয়েকটি বাক্যে তুলে ধরেছেন। সামান্য ক’টি শব্দে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের পথ নির্দেশিত হয়েছে। এককথায় তা হলো সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ রাখা।
মুসলমানের দায়িত্ব হলো আল্লাহকে স্মরণ রাখা। উঠা-বসা, চলা-ফেরা, জনসম্মুখ-নির্জন, কাজ-কর্ম ও খেলা-ধুলাসহ সকল ক্ষেত্রে স্মরণ রাখবে যে, আল্লাহ আমাকে দেখছেন। আমার সম্পর্কে অবগত আছেন। এভাবে কেউ যখন আল্লাহকে স্মরণ করবে তাহলে সে কখনো পাপ করবে না। পাপের কাছেও যাবে না। কোন অবস্থায় আল্লাহর রহমত হতে নিরাস হবে না, কোন চিন্তায় শঙ্কিত হবে না। নিজকে অসহায় ও নিরুপায় ভাববে না। আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে সাহায্যের হাত বাড়াবে না। কারণ তার বিশ্বাসে আল্লাহ তো সাথেই আছেন। তিনি সব দেখছেন। যাবতীয় প্রয়োজন তিনিই মিটাবেন।
মানুষ যদি মানবিক দুর্বলতার শিকার হয়ে কখনো পাপে জড়িয়েও যায় তাহলে আল্লাহকে এভাবে স্মরণ রাখার কারণে সাথে সাথেই তাওবা করে নিবে। কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পার্থনা করবে। পরিশেষে আল্লাহর ক্ষমা লাভে ধন্য হবে।
এসব কথা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইহসান’ এর সজ্ঞায় অল্প কয়েকটি বাক্যে প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন- ‘ইবাদ এভাবে করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ। ন্যূনতম এ কল্পনা করবে, তিনি তোমাকে দেখছেন।’- আলী তানতাবী।
(রাত- ১০.১২। ২৯-৭-১৪৩৮হি./ ২৯-৩-২০১৭ ঈ.)